সংলাপের মাধ্যমে সব পক্ষের সম্মতিতে কোটার প্রজ্ঞাপন হোক: সমন্বয়ক নাহিদ। চার দফা ‘জরুরি দাবি’ পূরণে সরকারকে আরও দুই দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা।মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান তারা। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম জানান, অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ ছাড়া কোটা প্রজ্ঞাপন সমীচীন নয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সরকার প্রজ্ঞাপন (কোটা সংস্কারের বিষয়ে) দিয়েছে। কিন্তু আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও কোটা যারা পান, তারা কোটাব্যবস্থার একেকজন অংশীজন। সেই অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা-সংলাপ ছাড়া এ ধরনের প্রজ্ঞাপন সমীচীন নয়। আমরা চেয়েছিলাম সংলাপের মাধ্যমে সব পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে একটি প্রজ্ঞাপন হবে, যাতে নতুন করে আর কখনো সমস্যা তৈরি না হয়।’
সংলাপের মাধ্যমে সব পক্ষের সম্মতিতে কোটার প্রজ্ঞাপন হোক: সমন্বয়ক নাহিদ
তিনি আরও বলেন, ‘সংলাপের যথাযথ পরিবেশ তৈরি করে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে কোটা সংস্কারের চূড়ান্ত সমাধান আমরা চাই। আমরা সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটাব্যবস্থার কথা বলেছিলাম, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটার কথা বলেছিলাম। এই বিষয়গুলো প্রজ্ঞাপনে প্রতিফলিত হয়েছে। কিন্তু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর বিষয়টির আরও ক্লারিফিকেশন (ব্যাখ্যা) দরকার এবং অংশীজনদের সঙ্গে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সংলাপ প্রয়োজন।’
এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, সরকার এই প্রজ্ঞাপন দিতে যত রক্ত মাড়িয়েছে, যত লাশ পড়েছে, তা অনাকাঙ্খিত। এর জবাব চান তারা। চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার পর আট দফা নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংলাপের দ্বার উন্মোচিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনায় হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি। অনেক বাবা এখনো সন্তানের লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। এত রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা কোটা সংস্কার চাইনি। আমরা সব হতাহতের বিচার চাই। আমাদের চূড়ান্ত দাবি ক্যাম্পাসগুলোতে গিয়ে সবার সঙ্গে আলোচনা করে জাতির সামনে পেশ করতে চাই। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমরা এই পরিস্থিতির অবসান চাই। হতাহতের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’
রোববার (২১ জুলাই) সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলকার (২২ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। জারি হওয়া প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এখন থেকে সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে সরাসরি নিয়োগে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। বাকি পদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। ফলে বাদ পড়লো মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতি, নারী ও জেলা কোটা।
আরও দেখুনঃ